বিবাহ (দারস- ৪)
অধ্যায়ঃ বিবাহ
দারস- ৪
যে সমস্ত গুণাবলীর কারনে মেয়েদের বিবাহ করা হয়ঃ
৯৭১. আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত নাবী(সাঃ) বলেছেনঃ চারটি কারনে রমণীকে বিয়ে করা হয়ে থাকে। তার সম্পদের জন্যে, বংশ মর্যাদার জন্যে, সৌন্দর্যের কারনে এবং তার দ্বীনদারের জন্যে সুতরাং তুমি দ্বীনদারী নারীকে বিবাহ করে সৌভাগ্যবান হও( সফলতা লাভ কর)। তোমার হাত দুটি ধুলিময় হোক।(বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবু দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ২৮৫৮, আহমাদ ৯২৩৭, দারেমী ২১৭০)
ব্যাখ্যাঃ
এ হাদিস থেকে জানা গেল যে, মোটকথা বিবাহের জন্য দ্বীনদার রমণী নির্বাচন করা উচিত। কারও ধন দৌলত, কারও সৌন্দর্যের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া ঠিক নয়। কেননা রমণী শুধুমাত্র স্ত্রীই হবে না শিশুর মাতাও হবে। সে সন্তানদের তরবিয়ত সঠিকভাবে তখনই করতে পারবে যখন নিজে সে সতী সধবী ও দ্বীনদার হবে। “তোমার হাত দুটি ধুলিময় হোক” এখানে দুয়ার জন্যে নয়; বরং এই জায়গায় চেষ্টা ও তদবির করার জন্যে উত্তেজিত ও উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ “সমস্ত দুনিয়াটা উপকারী বস্তু আর সর্বোত্তম উপকারী বস্তু হচ্ছে সৎ স্ত্রী।(মুসলিম ১৪৬৭) তিনি আরোও বলেনঃ “তোমাদের প্রত্যেকের শুকরকারী অন্তর ও যিকিরকারী জিব্বাহ হওয়া উচিত। আর এমন স্ত্রী গ্রহন করা উচিত, যে তার আখিরাতের কাজে সহায়তা করবে।”( সিলসিলা সহিহা ২১৭৬) সুতরাং এমন পাত্রী পছন্দ করা উচিত, যে হবে পুণ্যময়ী, সুশীলা, সচ্চরিত্রা, দ্বীনদার, পর্দানশীন, যাকে দেখলে মন খুশীতে ভরে উঠে, যাকে আদেশ করলে সত্বর পালন করে, স্বামীর বাইরে গেলে নিজের দেহ, সৌন্দর্য ও ইজ্জতের এবং স্বামীর ধন-সম্পদের যথার্থ রক্ষণা-বেক্ষণ করে।(নাসায়ী ৩২৩১, আহমাদ ২/
২৫১)
মহান আল্লাহ বলেনঃ “সুতরাং সাধ্বী নারী তো তারা, যারা(তাদের স্বামীদের
অনুপস্থিতিতে ও লোক চক্ষুর আড়ালে) অনুগতা এবং নিজেদের ইজ্জত রক্ষাকারিণী;
আল্লাহর হিফাযতে(তৌফিকে) তারা তা হিফাযত করে।”( সুরা নিসা আয়াত ৩৪) এর পর
দেখা উচিত ভাবি-সঙ্গিনীর পরিবেশ। শান্ত প্রকৃতির মেজাজ, মানসিক সুস্থতা
ইত্যাদি যাতে সংসার হয় প্রশান্তিময়। সর্বদিক দিয়ে নিজের মান যেমন, ঠিক সেই
সমপর্যায়ের মান ও পরিবেশের পাত্রী পছন্দ করা উচিত। পজিশন, শিক্ষা, সভ্যতা,
অর্থনৈতিক অবস্থা, বংশ প্রভৃতি উভ্যের সমান হলে সেটা উত্তম। যেমন উভয়ের
বয়সের মধ্যে বেশী তারতম্য থাকা উচিত নয়। হাদিসে বর্ণিত সব গুলো গুন পেলেই
পাত্রী সোনায় সোহাগা। দাম্পত্য জীবন হবে সুখের। দ্বীন হলো পাত্র-পাত্রী
পছন্দের এমাত্র মাধ্যম। বংশের উচতা-নীচুতা বলে ইস্লামে কিছুই নেই। মহান
আল্লাহ বলেনঃ “হে মানুষ ! আমি তোদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি
করেছি। পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা এক
অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক
মর্যাদাবান যে ব্যক্তি অধিক সংযমী(মুত্তাকী ও পরহেযগার)।”(সুর া হুজরাত আয়াত ১৩) তাছড়া ভাল মন্দ গোষ্টী-বর্ণের মধ্যে নির্দিষ্ট নয়।
বর কনে নির্বাচনের সময় বিবেচ্যঃ
১. পাত্র বা পাত্রী কোন স্কুলে পড়েছে জানার আগে কোন পরিবেশে মানুষ হয়েছে তা জানার চেষ্টা করা। কারণ অনেক সময় বংশ খারাপ হলেও পরিবেশের গুণে মানুষ সুন্দর ও চরিত্রবান হয়ে গড়ে উঠে।
২. পাত্র বা পাত্রী চরিত্র দেখার আগে তার বাপ মায়ের চরিত্রও বিচার্য।
৩. এমন সঙ্গী নির্বাচন করা উচিত যাতে উভয়ের ঈমান-আকিদা, পানাহার প্রকৃতি ও চরিত্রে মিল খায়। নচেৎ আচলাবস্থার আশংখাই বেশী (তুহফাতুল আরুস, মাহমুদ মাহদী ইস্তাম্বুলী)
জ্ঞানীরা বলেনঃ তোমার চেয়ে যে নীচে তার সঙ্গতা গ্রহণ কর। কারন হয়ত তুমি তার মূর্খতায় কষ্ট পাবে এবং তোমার চেয়ে যে উচ্চে তারও সাথী হয়ো না। কারণ সম্ভবত সে তোমার উপর গর্ব ও অহংকার প্রকাশ করবে। তু মি যেমন ঠিক তেমন সমমানের বন্ধু, সঙ্গী ও জীবন-সঙ্গিনী গ্রহন করো, তাতে তমার মনে কনো প্রকার ব্যথিত হবে না।” মুবারক আবু আবদুল্লাহ ব্যাপারে কথিত আছে যে, তিনি তার মুনিব এর বাগানে কাজ করতেন। তারমনিব বাগানের মালিক হামাযানের বর ব্যবসায়ী ছিলেন। একদিন বাগানে এসে গার্ডেনার কে বললেন, “মুবারক ! একটি মিষ্টি বেদানা চাই।” মুবারক গাছ থেকে খুজে খুজে একটি বেদানা ম্নিবের হাতে দিলেন। মনিব তা ভেঙ্গে খেতেই চটে উঠলেন। বললেনঃ “তোমাকে মিষ্টি দেখে আনতে বললাম, অথচ তুমি টক বেছেই নিয়ে এলে? মিষ্টি দেখে আন।” মুবারক অন্য একটি গাছ থেকে আর একটি বেদানা নিয়ে এনে দিলে তিনি খেয় দেখলেন এটাও টক। রেগে তৃতীয় বার পাঠালেন একই অবস্থা। মনিব বললেনঃ “আরে তুমি টক আর মিষ্টি বেদানা চেন না?” মুবারক বলেলনঃ জী না। আপনার অনুমতি না পেয়ে কি করে খেতাম?” গার্ডেনারের এই আমানতদারী ও সততা দেখে মনিব অবাক, তার চোখে তার কদর বেড়ে গেল।
মনিবের এক সুন্দরী কণ্যা ছিল। বহু বড় বড় পরিবার থেকেই তার বিয়ের সম্বন্ধ আসছিল। একদা মনিব মুবারককে ডেকে বল্লেনঃ”আমার মেয়ের সহিত কেমন লোকের বিয়ে হওয়া উচিত বলত? মুবারক বল্লেনঃ”জাহেলিয় াতের
যুগে লোকেরা বংশ ও কুলমান দেখে বিয়ে দিত, ইয়াহুদীরা দেয় ধন দেখে,
খ্রিস্টানরা দেয় রুপ-সৌন্দর্য দেখে। কিন্তু এই উম্মত কেবল দ্বীন দেখেই বিয়ে
দিয়ে থাকে।” এ ধরনের জ্ঞানগর্ব কথা মনিবের পছন্দ হল। মুবারকের কথা মনিব
তার নিজ স্ত্রীর নিকত উল্লেখ করে বললেনঃ “আমি তো মেয়ের জন্য মুবারকের চেয়ে
অধিক উপযুক্ত পাত্র আর কাউকে মনে করিনা।” হয়ে গেল বিবাহ। পিতা উভয়কে প্রচুর
অরথ সম্পদ দিয়ে তাদের দাম্পত্য জীবনে সাহায্য করলেন। এই সেই দম্পতি যাদের
ঔরসে জন্ম নিয়েছেন প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস, যাহেদ, বীর মুজাহিদ আবদুল্লাহ বিন
মুবারক। (আফিয়াতুল আ’ইয়ান, ইবনে খাল্লেকান ২/২৩৮) এই ছিল মেয়ের বাবা তার
মেয়ের আখিরাত বানানোর প্রতি খেয়াল রাখে পাত্র পছন্দ করার পদ্ধতি। দুনিয়ার
প্রতি খ্যাল রাখে নয়।
এক ব্যক্তি হাসান বাসরী (রহঃ) কে জিগেস করাল; “আমার একটি মেয়ে আছে। বহু জায়গা হতে বিয়ে আসছে ? কাকে দেব বলতে পারেন? হাসান বললেনঃ সেই পুরুষকে দেখে মেয়ে দাও; যে আল্লাহকে ভয় করে(যে পরহেযগার)। এতে সে যদি তাকে ভালবাসে তাহলে তার যথার্থ কদর করবে। আর ভাল না বাসলে সে তার উপর অত্যাচার করবে না।(উয়ূনুল আকবর, ইবনে কুতাইবাহ ৪/১৭) শুধু অভিভাবকই নয় বরং খোদ মেয়েদেরকেও এ ব্যপারে সচেতন হওয়া উচিত। আবু তালহা তখন ইসলাম গ্রহন অরেন নি। তিনি উম্মে সুলাইমকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে উম্মে সুলাইম বলেনঃ”আপনার মত যুবক স্বামী হওয়ার যোগ্য, রদযোগ্য নন। কিন্তু আপনি কাফের। আর আমি হলাম একজন মুসলিম নারী। তাই আমাদের মধ্যে বিবাহ শুদ্ধ নয়। আবু তালহা ধন দৌলতের লোভ দেখিয়ে বললেনঃ “তুমি কি সোনা চাদি ও অর্থ পেয়ে খুশী হতে পারবে না?” উম্মে সুলাইম বললেনঃ আমি সোনা চাদি চাই না। কিন্তু আপনি এমন মানুষ; যে শুনতে পায় না, দেখতে পায় না এবং উপকারও করতে পারে না এমন কোন হাবশি দাসে গড়া কাঠের মূর্তির পুজা করেন। এতে আপনার বিবেক বাধে না? শুনুন যদি আপনি মুসলাম হন, তাহলে আমি আপনাকে বিয়ে করব। আর ইসলামই হবে আমার মোহর! এছাড়া অন্য কিছু আমি মোহর রুপে চাইনা।
এক বিবাহে মজলিসে পাত্রী শর্ত লেখার সময় ১ম শর্ত ছিল, সে কলেজের অধ্যয়ন শেষ করবে, ২য় শর্ত ছিল পাত্র সিগেরেট পান করে, তাকে সিগেরাট পান ত্যাগ করতে হবে। উক্ত শর্ত পালনে বর সম্মত কিনা, তা জানতে প্রশ্ন করা হলে সে বল্ল,”ছাড়ার চেষ্টা করব। কনের কাছে তা বলা হলে সে বলল;” চেষ্টা নয় শর্তে লিখুন আজ থেকেই ছাড়বে এবং যে দিন পুনরায় সিগেরেট পান করবে সে দিন আমার এক তালাক বলে গন্য হবে! “ আজ সমাজে এমন গুনবতী কন্যার দরকার। ছেকের আকিদা বিশ্বাস ঠিক কিনা( কবর পুজারী কিনা ইত্যাদি), নামাযী কিনা, মাদক দ্রব্য সেবন করে কিনা, দাড়ি আছে কিনা, টাখনুর উপরে প্যান্ট বা পাজামা পড়ে কিনা বারীতে টিভি আছে কিনা, পর্দা করার ব্যবস্থা আছে কিনা, ইত্যাদি দেখে নেয়ার বিষয়।
নাবী সাঃ বলেন,”তোমাদে নিকট যখন এমন ব্যক্তি(বিবাহের
প্রস্তাব নিয়ে) আসে; যার দ্বীন চরিত্রে তোমরা মুগ্ধ তখন তার সহিত (মেয়ের)
বিবাহ দিয়ে দাও। যদি তা না কর তাহলে পৃথিবীতে ফিতনা ও মহা ফাসাদ সৃষ্টি হয়ে
যাবে” (সিলসিলা সহিহা ১০২২)
দারস- ৪
যে সমস্ত গুণাবলীর কারনে মেয়েদের বিবাহ করা হয়ঃ
৯৭১. আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত নাবী(সাঃ) বলেছেনঃ চারটি কারনে রমণীকে বিয়ে করা হয়ে থাকে। তার সম্পদের জন্যে, বংশ মর্যাদার জন্যে, সৌন্দর্যের কারনে এবং তার দ্বীনদারের জন্যে সুতরাং তুমি দ্বীনদারী নারীকে বিবাহ করে সৌভাগ্যবান হও( সফলতা লাভ কর)। তোমার হাত দুটি ধুলিময় হোক।(বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবু দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ২৮৫৮, আহমাদ ৯২৩৭, দারেমী ২১৭০)
ব্যাখ্যাঃ
এ হাদিস থেকে জানা গেল যে, মোটকথা বিবাহের জন্য দ্বীনদার রমণী নির্বাচন করা উচিত। কারও ধন দৌলত, কারও সৌন্দর্যের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া ঠিক নয়। কেননা রমণী শুধুমাত্র স্ত্রীই হবে না শিশুর মাতাও হবে। সে সন্তানদের তরবিয়ত সঠিকভাবে তখনই করতে পারবে যখন নিজে সে সতী সধবী ও দ্বীনদার হবে। “তোমার হাত দুটি ধুলিময় হোক” এখানে দুয়ার জন্যে নয়; বরং এই জায়গায় চেষ্টা ও তদবির করার জন্যে উত্তেজিত ও উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ “সমস্ত দুনিয়াটা উপকারী বস্তু আর সর্বোত্তম উপকারী বস্তু হচ্ছে সৎ স্ত্রী।(মুসলিম ১৪৬৭) তিনি আরোও বলেনঃ “তোমাদের প্রত্যেকের শুকরকারী অন্তর ও যিকিরকারী জিব্বাহ হওয়া উচিত। আর এমন স্ত্রী গ্রহন করা উচিত, যে তার আখিরাতের কাজে সহায়তা করবে।”( সিলসিলা সহিহা ২১৭৬) সুতরাং এমন পাত্রী পছন্দ করা উচিত, যে হবে পুণ্যময়ী, সুশীলা, সচ্চরিত্রা, দ্বীনদার, পর্দানশীন, যাকে দেখলে মন খুশীতে ভরে উঠে, যাকে আদেশ করলে সত্বর পালন করে, স্বামীর বাইরে গেলে নিজের দেহ, সৌন্দর্য ও ইজ্জতের এবং স্বামীর ধন-সম্পদের যথার্থ রক্ষণা-বেক্ষণ করে।(নাসায়ী ৩২৩১, আহমাদ ২/
বর কনে নির্বাচনের সময় বিবেচ্যঃ
১. পাত্র বা পাত্রী কোন স্কুলে পড়েছে জানার আগে কোন পরিবেশে মানুষ হয়েছে তা জানার চেষ্টা করা। কারণ অনেক সময় বংশ খারাপ হলেও পরিবেশের গুণে মানুষ সুন্দর ও চরিত্রবান হয়ে গড়ে উঠে।
২. পাত্র বা পাত্রী চরিত্র দেখার আগে তার বাপ মায়ের চরিত্রও বিচার্য।
৩. এমন সঙ্গী নির্বাচন করা উচিত যাতে উভয়ের ঈমান-আকিদা, পানাহার প্রকৃতি ও চরিত্রে মিল খায়। নচেৎ আচলাবস্থার আশংখাই বেশী (তুহফাতুল আরুস, মাহমুদ মাহদী ইস্তাম্বুলী)
জ্ঞানীরা বলেনঃ তোমার চেয়ে যে নীচে তার সঙ্গতা গ্রহণ কর। কারন হয়ত তুমি তার মূর্খতায় কষ্ট পাবে এবং তোমার চেয়ে যে উচ্চে তারও সাথী হয়ো না। কারণ সম্ভবত সে তোমার উপর গর্ব ও অহংকার প্রকাশ করবে। তু মি যেমন ঠিক তেমন সমমানের বন্ধু, সঙ্গী ও জীবন-সঙ্গিনী গ্রহন করো, তাতে তমার মনে কনো প্রকার ব্যথিত হবে না।” মুবারক আবু আবদুল্লাহ ব্যাপারে কথিত আছে যে, তিনি তার মুনিব এর বাগানে কাজ করতেন। তারমনিব বাগানের মালিক হামাযানের বর ব্যবসায়ী ছিলেন। একদিন বাগানে এসে গার্ডেনার কে বললেন, “মুবারক ! একটি মিষ্টি বেদানা চাই।” মুবারক গাছ থেকে খুজে খুজে একটি বেদানা ম্নিবের হাতে দিলেন। মনিব তা ভেঙ্গে খেতেই চটে উঠলেন। বললেনঃ “তোমাকে মিষ্টি দেখে আনতে বললাম, অথচ তুমি টক বেছেই নিয়ে এলে? মিষ্টি দেখে আন।” মুবারক অন্য একটি গাছ থেকে আর একটি বেদানা নিয়ে এনে দিলে তিনি খেয় দেখলেন এটাও টক। রেগে তৃতীয় বার পাঠালেন একই অবস্থা। মনিব বললেনঃ “আরে তুমি টক আর মিষ্টি বেদানা চেন না?” মুবারক বলেলনঃ জী না। আপনার অনুমতি না পেয়ে কি করে খেতাম?” গার্ডেনারের এই আমানতদারী ও সততা দেখে মনিব অবাক, তার চোখে তার কদর বেড়ে গেল।
মনিবের এক সুন্দরী কণ্যা ছিল। বহু বড় বড় পরিবার থেকেই তার বিয়ের সম্বন্ধ আসছিল। একদা মনিব মুবারককে ডেকে বল্লেনঃ”আমার মেয়ের সহিত কেমন লোকের বিয়ে হওয়া উচিত বলত? মুবারক বল্লেনঃ”জাহেলিয়
এক ব্যক্তি হাসান বাসরী (রহঃ) কে জিগেস করাল; “আমার একটি মেয়ে আছে। বহু জায়গা হতে বিয়ে আসছে ? কাকে দেব বলতে পারেন? হাসান বললেনঃ সেই পুরুষকে দেখে মেয়ে দাও; যে আল্লাহকে ভয় করে(যে পরহেযগার)। এতে সে যদি তাকে ভালবাসে তাহলে তার যথার্থ কদর করবে। আর ভাল না বাসলে সে তার উপর অত্যাচার করবে না।(উয়ূনুল আকবর, ইবনে কুতাইবাহ ৪/১৭) শুধু অভিভাবকই নয় বরং খোদ মেয়েদেরকেও এ ব্যপারে সচেতন হওয়া উচিত। আবু তালহা তখন ইসলাম গ্রহন অরেন নি। তিনি উম্মে সুলাইমকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে উম্মে সুলাইম বলেনঃ”আপনার মত যুবক স্বামী হওয়ার যোগ্য, রদযোগ্য নন। কিন্তু আপনি কাফের। আর আমি হলাম একজন মুসলিম নারী। তাই আমাদের মধ্যে বিবাহ শুদ্ধ নয়। আবু তালহা ধন দৌলতের লোভ দেখিয়ে বললেনঃ “তুমি কি সোনা চাদি ও অর্থ পেয়ে খুশী হতে পারবে না?” উম্মে সুলাইম বললেনঃ আমি সোনা চাদি চাই না। কিন্তু আপনি এমন মানুষ; যে শুনতে পায় না, দেখতে পায় না এবং উপকারও করতে পারে না এমন কোন হাবশি দাসে গড়া কাঠের মূর্তির পুজা করেন। এতে আপনার বিবেক বাধে না? শুনুন যদি আপনি মুসলাম হন, তাহলে আমি আপনাকে বিয়ে করব। আর ইসলামই হবে আমার মোহর! এছাড়া অন্য কিছু আমি মোহর রুপে চাইনা।
এক বিবাহে মজলিসে পাত্রী শর্ত লেখার সময় ১ম শর্ত ছিল, সে কলেজের অধ্যয়ন শেষ করবে, ২য় শর্ত ছিল পাত্র সিগেরেট পান করে, তাকে সিগেরাট পান ত্যাগ করতে হবে। উক্ত শর্ত পালনে বর সম্মত কিনা, তা জানতে প্রশ্ন করা হলে সে বল্ল,”ছাড়ার চেষ্টা করব। কনের কাছে তা বলা হলে সে বলল;” চেষ্টা নয় শর্তে লিখুন আজ থেকেই ছাড়বে এবং যে দিন পুনরায় সিগেরেট পান করবে সে দিন আমার এক তালাক বলে গন্য হবে! “ আজ সমাজে এমন গুনবতী কন্যার দরকার। ছেকের আকিদা বিশ্বাস ঠিক কিনা( কবর পুজারী কিনা ইত্যাদি), নামাযী কিনা, মাদক দ্রব্য সেবন করে কিনা, দাড়ি আছে কিনা, টাখনুর উপরে প্যান্ট বা পাজামা পড়ে কিনা বারীতে টিভি আছে কিনা, পর্দা করার ব্যবস্থা আছে কিনা, ইত্যাদি দেখে নেয়ার বিষয়।
নাবী সাঃ বলেন,”তোমাদে নিকট যখন এমন ব্যক্তি(বিবাহের
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন